'ভাই, আপনি কি একটা ইন্টারেস্টিং গল্প শুনতে চান?'
আমি ভদ্রলোকের দিকে অবাক হয়ে তাকালাম। কিছুক্ষণ আগে তাঁর সঙ্গে আলাপ আলাপ হয়েছে। তাও এমন কোনো আলাপ না। আমি ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি কিনা জানতে চাইলেন। আমি বললাম 'হ্যাঁ' এবং ভদ্রতা করে জানতে চাইলাম, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
ভদ্রলোক হাসিমুখে বললেন, আমি কোথাও যাচ্ছি না। আমি আমার স্ত্রীকে রিসিভ করতে এসেছি। ও চিটাগাং থেকে আসছে। ট্রেন দুঘণ্টা লেট। ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে না। বাসায় যাব আবার আসব, ভাবলাম অপেক্ষা করি।
তাঁর সঙ্গে এইটুকু আমার আলাপ। এই আলাপের সূত্র ধরে কেউ যখন বলে, ভাই আপনি কি একটা ইন্টারেস্টিং গল্প শুনতে চান, তখন খানিকটা হলেও বিস্মিত হতে হয়। অপরিচিত লোকের কাছ থেকে গল্প শোনার আগ্রহ আমার কম। তা ছাড়া আমি আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় লক্ষ করেছি- ইন্টারেস্টিং গল্প বলে যে-গল্প শুরু হয় সে-গল্প কখনোই ইন্টারেস্টিং হয় না।
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম। ভদ্রলোক বুদ্ধিমান হলে আমার চুপ করে থাকার অর্থ বুঝতে পারবেন। বুদ্ধিমান না হলে এই গল্প আমায় শুনতেই হবে।
দেখা গেল ভদ্রলোক মোটেই বুদ্ধিমান নন। পকেট থেকে পানের কৌটা বের করে পান সাজাতে-সাজাতে গল্প শুরু করলেন-
'আপনি নিশ্চয় খুব বিরক্ত হয়ে আমার কথা শুনছেন। নিতান্তই অপরিচিত একজন মানুষ হড়বড় করে গল্প করা শুরু করেছে। বিরক্ত হবারই কথা। কিন্তু সমস্যাটা কী জানেন? আজ আমার জন্যে একটা বিশেষ দিন। এই বিশেষ দিনে আমার মজার গল্পটা কাওকে-না-কাওকে বলতে ইচ্ছে করে। যদি অনুমতি দেন গল্পটা বলি?'
'বলুন।'
'আপনি কি পান খান?'
'জি-না।'
'একটা খেয়ে দেখুন মিষ্টি পান। খারাপ লাগবে না।'
'আপনি কি বিশেষ দিনে গল্পের সঙ্গে-সঙ্গে পানও
খাওয়ান?'
ভদ্রলোক হেসে ফেললেন। আন্তরিক ভঙ্গিতেই হাসলেন। ভদ্রলোকের বয়স চল্লিশের মত হবে। অত্যন্ত সুপুরুষ। ধবধবে সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবিতে তাঁকে চমৎকার মানিয়েছে। মনে হচ্ছে তিনি স্ত্রীর জন্যে খুব সেজেগুজেই এসেছেন।
'প্রায় কুড়ি বছর আগের কথা। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করছি পদার্থবিদ্যায়। এখানে অন্ধকার বলে আপনি সম্ভবত আমাকে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছেন না। আলো থাকলে বুঝতেন আমি বেশ সুপুরুষ। কুড়ি বছর আগে দেখতে রাজপুত্রের মত ছিলাম। ছাত্রমহলে আমার নাম ছিল- 'দ্যা প্রিন্স'। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েমহলে আমার কোনো পাত্তা ছিল না। আপনি ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন কিনা জানি না- পুরুষদের রূপের প্রতি মেয়েরা কখনো আকৃষ্ট হয় না। পুরুষদের সবকিছুই তাদের চোখে পড়ে- রূপ চোখে পড়েনা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কোনো মেয়ে আমার সঙ্গে ভাব করার জন্য কিংবা কথা বলার জন্য এগিয়ে আসে নি। আমিও নিজ থেকে এগিয়ে যাই নি। কারণ আমার তোতলামি আছে। কথা আটকে যায়।'
আমি ভদ্রলোককে থামিয়ে দিয়ে বললাম, আমি তো কোনো তোতলামি দেখছি না। আপনি চমৎকার কথা বলে যাচ্ছেন।
'বিয়ের পর আমার তোতলামি সেরে যায়। বিয়ের আগে প্রচন্ডরকম ছিল। অনেক চিকিৎসাও করেছি। মার্বেল মুখে নিয়ে কথা বলা থেকে শুরু করে হোমিওপ্যাথি ওষুধ, পীর সাহেবের তাবিজ কিছুই বাদ দেই নি। যাই হোক- গল্পে ফিরে যাই, আমার সাবসিডিয়ারি ছিল ম্যাথ এবং কেমিস্ট্রি। কেমিস্ট্রি সাবসিডিয়ারিতে একটি মেয়েকে দেখে আমার প্রায় দম বন্ধ হয়ে যাবার মত অবস্থা হল। কী মিস্টি চেহারা! দীর্ঘ পল্লব, ছায়াময় চোখ। সেই চোখ সব সময় হাসছে। ভাই, আপনি কি কখনো প্রেমে পড়েছেন?'
'জি-না।'
'প্রেমে না পড়লে আমার সেই সময়কার মানসিকতা আপনাকে বোঝাতে পারবা না। আমি প্রথম দিন মেয়েটিকে দেখেই পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে পড়লাম। সারারাত ঘুম হল না। পানির পিপাসায় একটু পরপর গলা শুকিয়ে যায়। পানি খাই আর মহসিন হলের বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করি।
সপ্তাহে আমাদের দু'টা মাত্র সাবসিডিয়ারি ক্লাস। রাগে-দুঃখে আমার কাঁদতে ইচ্ছা করে। প্রতিদিন একটা করে সাবসিডিয়ারি ক্লাস থাকলে কী ক্ষতি হত? সপ্তাহের দু'টা ক্লাস মানে পঞ্চাশ মিনিট করে একশ মিনিট। এই একশ মিনিট চোখের পলকে শেষ হয়ে যায়। তাছাড়া মেয়েটা খুব ক্লাস ফাঁকি দেয়। এমনও হয়েছে সে পরপর দু-সপ্তাহ কোনো ক্লাস করল না। তখন আমার ইচ্ছা করত লাফ দিয়ে মহসিন হলের ছাদ থেকে নিচে পড়ে সমস্ত জ্বালা-যন্ত্রণার অবসান ঘটাই। সে যে কী ভয়াবহ কষ্ট আপনি বুঝবেন না। কারণ আপনি কখনো প্রেমে পড়েন নি।'
'মেয়েটার নাম তো বললেন না, তার নাম কী?'
'তার নাম রূপা। সেই সময় আমি অবিশ্যি তার নাম জানতাম না। নাম কেনো- কিছুই জানতাম না। কোন্ ডিপার্টমেন্টের ছাত্রী তাও জানতাম না। শুধু জানতাম তার সাবসিডিয়ারিতে ম্যাথ আছে এবং সে কালো রঙের একটা মরিস মাইনর গাড়িতে করে আসে। গাড়ির নাম্বার- S 8080।'
'আপনি তার সম্পর্কে কোনোরকম খোঁজ নেন নি?'
'না খোঁজ নেই নি। কারণ আমার সব সময় ভয় হত খোঁজ নিতে গেলেই জানব- মেয়েটার হয়তোবা কারো সঙ্গে ভাব আছে। একদিনের একটা ঘটনা বললেই আপনি বুঝতে পারবেন- সাবসিডিয়ারি ক্লাসের শেষে আমি হঠাৎ লক্ষ্য করলাম মেয়েটা হেসে- হেসে একটা ছেলের সঙ্গে গল্প করছে। আমার সমস্ত শরীর কাঁপতে লাগল। মনে হল আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাব। সব ক্লাস বাদ দিয়ে হলে এলাম এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্ত শরীর কাঁপিয়ে আমার জ্বর এসে গেল।'
'আশ্চর্য তো!'
'আশ্চর্য তো বটেই। পুরো দু-বছর আমার এইভাবেই কাটল। পড়াশোনা মাথায় উঠল। তারপর একদিন অসীম সাহসের কাজ করে ফেললাম। মরিস মাইনর গাড়ির ড্রাইভারের কাছ থেকে বাড়ির ঠিকানা জেনে নিলাম। তারপর মেয়েটিকে সম্বোধনহীন একটা চিঠি লিখলাম। কী লিখেছিলাম এখন আর মনে নেই। তবে চিঠির বিষয়বস্তু হচ্ছে- আমি তাকে বিয়ে করতে চাই। তাকে রাজি হতেই হবে। রাজি না-হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের বাড়ির সামনে না খেয়ে পড়ে থাকব। যাকে পত্রিকার ভাষায় বলে 'আমরণ অনশন'। গল্পটা কী আপনার কাছে ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে?'
'হ্যাঁ হচ্ছে। তারপর কী হল বলুন। চিঠি ডাকে পাঠিয়ে দিলেন?'
'না। নিজেই হাতে করে নিয়ে গেলাম। ওদের বাড়ির দারোয়ানের হাতে দিয়ে বললাম, এ বাড়ির একজন আপা আছেন না- ইউনিভার্সিটিতে পড়ে- তাঁর হাতে দিয়ে এস। দারোয়ান লক্ষ্মী ছেলের মত চিঠি নিয়ে চলে গেল এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে এসে বলল, আপা বলেছেন তিনি আপনেরে চিনেন না। আমি বললাম, তিনি ঠিকই বলেছেন, তবে আমি তাঁকে চিনি। এটাই যথেষ্ট।
এই বলে আমি গেটের বাইরে খুঁটি গেড়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। বুঝতেই পারছেন- নিতান্তই পাগলের কাণ্ড। সেই সময় মাথা আসলেই বেঠিক ছিল। লজিক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক, সকাল ন'টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত কোনোরকম ঘটনা ছাড়াই গেটের সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম। লক্ষ্য করলাম দোতলার জানালা থেকে মাঝো-মধ্যে কিছু কৌতুহলী চোখ আমাকে দেখছে। বিকেল চারটায় এক ভদ্রলোক বাড়ি থেকে বের হয়ে কঠিন গলায় বললেন, যথেষ্ট পাগলামি করা হয়েছে। এখন বাড়ি যাও।'
আমি তার চেয়েও কঠিন গলায় বললাম, যাব না।
'পুলিশে খবর দিচ্ছি। পুলিশ এসে তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে।'
'কোনো অসুবিধা নেই খবর দিন।'
'ইউ রাস্কেল মাতলামি করার জায়গা পাও না?'
'গালাগালি করছেন কেন? আমি তো আপনাকে গালি দিচ্ছি না।'
ভদ্রলোক রাগে জ্বলতে জ্বলতে বাড়ির ভেতর চলে গেলেন। তার পরপরই শুরু হল বৃষ্টি। ঢালাও বর্ষণ। আমি ভিজছি নির্বিকার ভঙ্গিতে। সঙ্গে সঙ্গে বুঝছি যে জ্বর এসে যাচ্ছে। সারাদিন রোদে পোড়ার পর এই বৃষ্টি সহ্য হবে না। তখন একটা বেপরোয়া ভাব চলে এসেছে- যা হবার হবে। ক্ষুধায়, ক্লান্তিতে শরীর অবসন্ন। মাঝে- মাঝেই মনে হচ্ছে এই বুঝি মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম।
ইতোমধ্যে আমি আশেপাশের মানুষদের কৌতুহলী দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছি। বেশ কয়েকজন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে? এখানে দাঁড়িয়ে ভিজছেন কেন? আমি তাঁদের সবাইকে বলেছি, আমাকে নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। আমি একজন পাগল মানুষ।
মেয়েটির বাড়ি থেকেও হয়তো টেলিফোনে এই ঘটনার কথা কাউকে- কাউকে জানানো হয়েছে। তিনটি গাড়ি তাদের বাড়িতে এল। গাড়ির আরোহীরা রাগী ভঙ্গিতে আমার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকলেন।
রাত ন'টা বাজল। বৃষ্টি এক মুহূর্তের জন্যও থামল না। জ্বরে তখন আমার গা পুড়ে যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। পা ছড়িয়ে বসে পড়লাম। দারোয়ান এসে আমাকে ফিসফিস করে বলল, সাহেব পুলিশ আনতে চাইতেছেন, বড় আফা রাজি না। বড় আফা আপনের অবস্থা দেইখ্যা কানতাছেন। টাইট হইয়া বইয়া থাকেন।
আমি টাইট হয়ে বসে রইলাম।
রাত এগারোটা বাজল। ওদের বাড়ির বারান্দায় বাতি জ্বলে উঠল। বসার ঘরের দরজা খুলে মেয়েটি বের হয়ে এল। মেয়েটির পেছনে-পেছনে ওদের বাড়ির সব ক'জন মানুষ। ওরা কেউ বারান্দা থেকে নামল না। মেয়েটি একা এগিয়ে এল। আমার সামনে এসে দাঁড়াল এবং অসম্ভব কোমল গলায় বলল, কেন এমন পাগলামি করছেন? github.com/w3cp
আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলাম। কারণ এই মেয়ে সেই মেয়ে নয়। অন্য একটি মেয়ে। একে আমি কোনোদিন দেখি নি। মরিস মাইনর গাড়ির ড্রাইভার আমাকে ভুল ঠিকানা দিয়েছে। হয়তো ইচ্ছা করেই দিয়েছে।
মেয়েটি নরম গলায় বলল, আসুন, ভেতরে আসুন। টেবিলে খাবার দেয়া হয়েছে। আসুন তো।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। বলতে চেষ্টা করলাম, কিছু মনে করবেন না। আমার ভুল হয়ে গেছে। আপনি সেই মেয়ে নন। আপনি অন্য একজন। মেয়েটির মমতায় ডুবানো চোখের দিকে তাকিয়ে এই কথা বলা সম্ভব হল না। এত মমতা নিয়ে কোনো নারী আমার দিকে তাকায় নি।
জ্বরের ঘোরে আমি ঠিকমত পা ফেলতে পারছিলাম না। মেয়েটি বলল, আপনার বোধ হয় শরীর খারাপ। আপনি আমার হাত ধরে হাঁটুন। কোনো অসুবিধা নেই।
বাসার সবাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে কঠিন চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের সবার কঠিন দৃষ্টি উপেক্ষা করে মেয়েটি হাত বাড়িয়ে দিল। যে গভীর ভালোবাসায় হাত বাড়াল সে ভালোবাসাকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা ঈশ্বর মানুষকে দেন নি। আমি তার হাত ধরলাম। এই কুড়ি বছর ধরেই ধরে আছি। মাঝে-মাঝে একধরনের অস্থিরতা বোধ করি। ভ্রান্তির এই গল্প আমার স্ত্রীকে বলতে ইচ্ছা করে। বলতে পারি না। তখন আপনার মত অপরিচিত একজন কাউকে খুঁজে বের করি। গল্পটা বলি। কারণ আমি জানি- এই গল্প কোনোদিন আমার স্ত্রীর কানে পৌঁছাবে না। আচ্ছা ভাই, উঠি। আমার ট্রেন এসে গেল।'
ভদ্রলোক উঠে দাঁড়ালেন। দূরে ট্রেনের আলো দেখা যাচ্ছে। রেললাইনে ঘড়ঘড় শব্দ উঠছে। ট্রেন সত্যি-সত্যি এসে গেল।
১
অতিপ্রাকৃত গল্পে গল্পের চেয়ে ভূমিকা বড় হয়ে থাকে।
গাছ যত-না বড় তার ডালপালা তার চেয়েও বড়। এই গল্পেও তাই হবে। একটা দীর্ঘ ভূমিকা
দিয়ে শুরু করব। পাঠকদের অনুরোধ করছি তাঁরা যেন ভূমিকাটা পড়েন। এর প্রয়োজন আছে।
আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে।
বাবা-মা'র একমাত্র ছেলে। দেখতে রাজপুত্র না হলেও বেশ সুপুরুষ। এম. এ. পাস করেছে।
বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করা এবং গ্রুপ থিয়েটার করা- এ দুইয়ে তার কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ।
বাবা-মা'র একমাত্র ছেলে হলে যা হয়- বিয়ের জন্য অসংখ্য মেয়ে দেখা হতে লাগল।
কাউকেই পছন্দ হয় না। কেউ বেশি লম্বা, কেউ বেশি বেঁটে, কেউ বেশি ফর্সা, কেউ বেশি
কথা বলে, আবার কেউ-কেউ দেখা গেল কম কথা বলে। নানান ফ্যাঁকড়া।
শেষ পর্যন্ত যাকে পছন্দ হলো, সে মেয়ে ঢাকা ইডেন কলেজে বি.এ পড়ে- ইতিহাসে অনার্স।
মেয়ের বাবা নেই। মা'র অন্য কোথায় বিয়ে হয়েছে। মেয়ে তার বড় চাচার বাড়িতে মানুষ।
তিনিই তাকে খরচপত্র দিয়ে বিয়ে দিচ্ছেন।
আমার মামা এবং মামী দু'জনের কেউই এই বিয়ে সহজভাবে মেনে নিতে পারলেন না। যে- মেয়ের বাবা নেই,
মা আবার বিয়ে করেছে- পাত্রী হিসেবে সে তেমন কিছুই না। তা ছাড়া সে খুব সুন্দরীও না। মোটামুটি ধরনের
চেহারা। আমার মামাতো ভাই তবু কেন জানি একবারমাত্র এই মেয়েকে দেখেই বলে দিয়েছে- এই মেয়ে ছাড়া
আর কাউকে সে বিয়ে করবে না। মেয়ের বাবা নেই তো কী হয়েছে? সবার বাবা চিরকাল থাকে নাকি? মেয়ের
মা'র বিয়ে হয়েছে, তাতে অসুবিধাটা কী? অল্প বয়সে বিধবা হয়েছেন, তাঁর তো বিয়ে করাই উচিত।
এমন তো না যে, দেশে বিধবাবিবাহ নিষিদ্ধ।
...
[Will be updated soon... (11th June, 2017)]